Daily Archives: August 1, 2020

বিশ্বকাপ ওঠেনি যে কিংবদন্তিদের হাতে

চার বছরে একবারই আসে বিশ্বকাপ। দাবিদার আবার ৩২ দেশ। শুরুর দিকে সংখ্যাটা ছিল আরও কম। অংশ নেয়া দেশগুলোয় থাকে তারকা-মহাতারকা ছড়াছড়ি! এবারই যেমন আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি, ব্রাজিলের নেইমার আর পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো প্রতিটি দেশেরই কেউ না কেউ আছেন।

ফুটবলের সবচেয়ে বড় আক্ষেপের জন্মও দেন এই মহাতারকারা। ১৮ ক্যারট স্বর্ণের ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখা হয় না অনেক কিংবদন্তিরই। মেসি ২০১৪ বিশ্বকাপে খুব কাছে গিয়েও শিরোপা উঁচিয়ে ধরার মহাকাব্য লিখতে পারেননি। চারবছর পর দরজায় কড়া নাড়ছে আরেকটি বিশ্বকাপ। হয়ত এটিই তার শেষ সুযোগ!

বয়স ৩৩ পেরিয়েছে রোনালদোর। চূড়ান্ত ফর্মে থাকা সময়ের দুই তারকার জন্যই এ বিশ্বকাপটা ‘হয় এবার, নয়তো কখনোই নয়’ রকমের! ছুঁয়ে দেখতে না পারলে মেসি-রোনালদোও নাম লেখাবেন ‘ট্র্যাজিক হিরো’দের কাতারে। যারা খেলাটার কিংবদন্তি, কিন্তু পুড়েছেন বিশ্বকাপ ছুঁতে না পারার ব্যর্থতায়।

তিন পর্বের ধারাবাহিকের শুরুতেই থাকছে এমন ৬ কিংবদন্তির কথা-

আলফ্রেডো ডি স্টেফানো

আলফ্রেডো ডি স্টেফানো
আর্জেন্টিনায় জন্মানো এই কিংবদন্তি তিনটি দেশ আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া-স্পেনের হয়ে খেলেছেন। কিন্তু বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করাতে পারেননি দুটি দলকেই। ১৯৬২ সালে স্পেনকে কোয়ালিফাই করালেও চোটের কারণে আবার বিশ্বকাপেই যাওয়া হয়নি স্টেফানোর।

মিশেল প্লাতিনি

মিশেল প্লাতিনি
তিনবার ব্যালন ডি’অর জয়ী কিংবদন্তি। বিংশ শতাব্দির সেরা ফুটবলারদের তালিকায় ছিলেন ষষ্ঠ স্থানে। ফ্রান্সকে ইউরো কাপের স্বাদ দেয়া মিশেল প্লাতিনির হাতেও কখনো ওঠেনি বিশ্বকাপ। তিনটি বিশ্বকাপে খেলেছেন। যার দুটিতে সেমিফাইনাল অবধি পা রাখতে পেরেছেন।

ফেরেঙ্ক পুসকাস

ফেরেঙ্ক পুসকাস
রিয়াল মাদ্রিদকে টানা ৫বার ইউরোপিয়ান কাপ জিতিয়েছেন। ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম আক্ষেপ বোধহয় ফেরেঙ্ক পুসকাসের হাতে জুলে রিমে ট্রফি না ওঠা। হাঙ্গেরির ‘মাইটি ম্যাগায়ার্স বা সোনালী দলে’র অধিনায়ক ছিলেন। দেশকে তুলেছিলেন ১৯৫৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে। কিন্তু ওয়েস্ট জার্মানির বিপক্ষে ফাইনালে ২ গোলে এগিয়ে থেকেও ৩-২ ব্যবধানে হেরে যায় পুসকাসের হাঙ্গেরি। গোড়ালির চোট নিয়েও ম্যাচে কিছু সময় মাঠে ছিলেন পুসকাস। জেতা হয়নি ট্রফিটা।

ইউসেবিও

ইউসেবিও
মোজাম্বিকে জন্ম হলেও খেলেছেন পর্তুগালের হয়ে। বেনফিকার হয়ে ৭২৫টি গোল করেছেন ৭২৭ ম্যাচে। ইউরোপ সেরা হয়ে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে জিতেছেন গোল্ডেন বুট। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে ৯ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতাও হন। সেমিফাইনালে পেনাল্টি শুট আউটে ইংল্যান্ডের কাছে হারে পর্তুগাল। ইউসেবিওর হাতেও ওঠেনি বিশ্বকাপ।

লেভ ইয়াসিন

লেভ ইয়াসিন
তাকে বলা হয় সর্বকালের সেরা গোলরক্ষক। অসাধারণ রিফ্লেক্স আর গায়ে কালো জার্সির কারণে খ্যাতি পেয়েছিলেন ‘কালো মাকড়সা’ হিসেবে। ১৩ বছর ধরে সোভিয়েত ইউনিয়নের সেরা গোলরক্ষক ছিলেন। ২০ বছরের অসাধারণ ফুটবল ক্যারিয়ারে একবার বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ওঠাই লেভ ইয়াসিনের সেরা অর্জন।

সক্রেটিস

সক্রেটিস
ছিলেন চিকিৎসক। কিন্তু বাজিলিয়েরো সামপাইয়ো ডি সুজা ভিয়েরা ডি অলিভিয়েরাকে ফুটবল বিশ্ব চেনে এক নামেই। সক্রেটিস। এক ট্র্যাজিক হিরোর নামও। জিকো, জুনিয়র, ফ্যালকাও, সক্রেটিসদের নিয়ে গড়া ব্রাজিল দলকে বলা হয় বিশ্বকাপ না জেতা সর্বকালের সেরা দল। ১৯৮২ ও ১৯৮৬ বিশ্বকাপে সেলেসাওদের নেতৃত্ব দিয়ে সাফল্যহীন ফুটবলের ‘সক্রেটিস’।

করোনা মহামারিকালে আরেকটি ঈদ পালন করছেন বাংলাদেশের মানুষ৷

‘‘হে আল্লাহ, যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সুস্থতা দান করুন৷ আপনি এই ভাইরাস  থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করুন, আমাদের মাফ করুন৷ সারা পৃথিবীর মানুষকে মাফ করে দিন৷ সারাবিশ্বকে করোনামুক্ত করে দিন৷ আমিন৷’’ শনিবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত শেষে এভাবেই মোনাজাতে আকুতি করেন জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান৷

করোনা আর বন্যার মধ্যে ঈদুল আজহায় মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা কেমন ছিল? জানতে চাইলে হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা আগে থেকেই মসজিদে আসা সকলকে সতর্ক করেছিলাম, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবং সরকারি বিধি বিধান মেনে জামাতে অংশ নিতে৷ তারা সেটা মেনেই ঈদের জামাতে অংশ নিয়েছেন৷ আসলে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল, কিন্তু সেটা আগের মতো নয়৷ পরিস্থিতিটা তো আসলে স্বাভাবিক নয়৷ তবে সবাই ধর্মীয় বিধি বিধান মেনেই ঈদুল আজহা পালন করছেন৷ আমরা যেন সামনের সময়ে উৎসবগুলো সবাই মিলে উদযাপন করতে পারি আল্লাহর কাছে সেই দোয়াই করেছি৷’’

করোনার কারণে এবারও জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি৷ মসজিদগুলোতেই সবাই নামাজ আদায় করেছেন৷ জাতীয় মসজিদে ঢোকার আগে আগতদের মাস্ক আছে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে নিয়েছেন প্রবেশমুখে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা৷ নামাজের জন্য মুসল্লিদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরত্ব বজায় রেখে বসতে দেখা যায়৷ প্রত্যেকেই নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসেন৷ তবে শিশু ও বৃদ্ধসহ অসুস্থ ব্যক্তি বা অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা জামাতে অংশ নেননি৷

রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বঙ্গভবনে ঈদের নামাজ আদায় করেন৷ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে সবাইকে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন৷ এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এবার আমরা এক সংকটময় সময়ে ঈদুল আজহা উদযাপন করছি৷ করোনা ভাইরাস সমগ্র বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে৷ আমাদের সরকার এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে৷ আমরা জনগণকে সকল সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি৷’’

শেষ মুহুর্তে কোরবানির পশুর সংকট

করোনার কারণে মানুষের সামর্থ্য কমে গেছে৷ ফলে এবার খুব একটা কোরবানি হবে না, এমনটাই ধরণা করেছিলেন সবাই৷ কিন্তু শেষ মুহূর্তে এই ধারণা পাল্টে যায়৷ বৃহস্পতিবার রাত থেকেই রাজধানীর পশুহাটগুলোতে কোরবানির পশুর সংকট দেখা দেয়৷ অনেকেই শেষ পর্যন্ত কোরবানির পশু কিনতে পারেননি৷ এমনকি যারা গরু কিনতে চেয়েছিলেন, তারা না পেয়ে খাসি (ছাগল) কিনতে বাধ্য হয়েছেন৷ অনেকে কিনতেই পারেননি৷

মেহেরপুর থেকে ঢাকার বাড্ডার নতুন বাজারে ৪০টি গরু এনেছিলেন মো. হুমায়ুন মিয়া৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত একটি গরুও তিনি বিক্রি করতে পারেননি৷ শুক্রবার সকালে এক ঘণ্টার মধ্যে তার সবগুলো গরু বিক্রি হয়ে যায়৷ ৮০ হাজার থেকে চার লাখ টাকা দামে গরুগুলো তিনি বিক্রি করেছেন৷ হুমায়ুন মিয়ার মতে, শেষ মুহুর্তে অনেকেই গরু পাননি৷ পর্যাপ্ত টাকা থাকার পরও বহু মানুষকে গরু না কিনেই ফিরে যেতে হয়েছে৷ নিজের গরুগুলো তিনি পছন্দসই দামেই বিক্রি করতে পেরেছেন বলে জানান৷

ছবিতে ঢাকার ঈদ উদযাপন

সন্তানকে নিয়ে নামাজে বাবার সাথে বায়তুল মোকাররম মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে এসেছে ছয় বছরের মাইশা করিম৷ রোযার ঈদের মতো এবারও জাতীয় ঈদগাহে দেশের প্রধান জামাত হয়নি৷ নামাজ আদায়ে মুসল্লিদের গন্তব্য ছিল তাই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে৷
জীবাণুমুক্তকরণ ব্যবস্থা ঈদের জামাতে অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের জন্য মসজিদের প্রবেশপথে ছিল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক স্প্রে বুথের ব্যবস্থা৷
জামাতে দূরত্ব বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার ছয়টি প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়৷ সকাল সাতটায় শুরু হয় প্রথম জামাত৷ মুসল্লিরা যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে নামাজে অংশগ্রহণ করেন৷
মোনাজাতে আকুতি ত্যাগের মহিমায় পালিত হচ্ছে ঈদুল আজহা৷ করোনার কারণে এই বছর ঈদের বাস্তবতাও অন্যবারের চেয়ে আলাদা৷ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ঈদের জামাতের মোনাজাতে একজন মুসল্লি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন৷
কোলাকুলি মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিদের প্রতি সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান ছিল৷ কোলাকুলিতেও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে৷ তবে অনেকেই তা মানেননি৷
পশুর গোসল
কোরবানি দেয়ার আগে শান্তিনগরে একটি ছাগলকে পরিচ্ছন্ন করে নেয়া হচ্ছে৷
কোরবানি দেওয়ার জন্য পশুটিকে কোনভাবেই মাটিতে শোয়ানো যাচ্ছিল না৷ আনাড়ি হাতগুলোর সাথে বেশ কিছুক্ষণ ধস্তাধস্তি শেষে অবশেষে পশুটিকে হার মানতেই হলো৷
তদারকি
বাড়ির নিচে কোরবানির কাজ তদারকি করছেন এম এ সালাম৷ ঈদের তিন দিন আগেই ৭৮ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছিলেন তিনি৷
কসাইদের ব্যস্ততা
জুলহাস খান ও তাঁর সহযোগী রফিক পেশাদার কসাই, তাদের দোকান রয়েছে ঢাকার রায়েরবাজারে৷ সকাল ১০টার মধ্যেই সাতটি পশু কাটাকাটি শেষ করে তারা রওনা দিয়েছেন আরও ৪ টি পশু প্রক্রিয়ার কাজে৷ এই দিনটাতে তাদের প্রচুর ব্যস্ততা থাকে৷
পরিচ্ছন্নতা
বাসার সামনের রাস্তায় পশু জবাই করা হয়েছে৷ বর্জ্য থেকে যেন দূর্গন্ধ না ছড়ায় তাই দ্রুত একজন পানি দিয়ে সেসব পরিষ্কার করে নিচ্ছেন৷
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন মেয়র ২৪ ঘণ্টার মাঝেই সকল বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দিয়েছেন৷ এরই অংশ হিসেবে প্রায় ৭০০ গাড়ি নিয়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করতে দেখা গেল৷
কোরবানির সংখ্যা কম
শান্তিনগরের একটি আবাসিক ভবনে প্রায় ১০০ টি পরিবারের বাস৷ প্রতিবছর কমপক্ষে ৬০ টি পশু কোরবানি হলেও এবার হচ্ছে মাত্র নয়টি৷

কর্মস্থলেই ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধারা

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আগেই ছুটি বাতিল করা হয়৷ ফলে তারা কর্মস্থলে থেকেছেন৷ কোভিড পরিস্থিতির কারণে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অধিকাংশই হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন৷

জাতীয় অর্থপেডিক ও পুর্নবাসন কেন্দ্রের (পঙ্গু হাসপাতাল) অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘করোনার কারণে শুধু নয়, অধিকাংশ ঈদেই আমাদের কর্মস্থলে থাকতে হয়৷ তারপরও কিছু চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী ছুটি পেতেন৷ কিন্তু এবার করোনার কারণে কেউ ছুটিতে যেতে পারেননি৷ আমি নিজেও ঈদের দিন হাসপাতালে ডিউটি করছি৷ চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে শুধু ডিউটি নয়, পরিবার থেকেও আমরা অনেকদিনই বিচ্ছিন্ন রয়েছি৷’’

অর্থনৈতিক দুরাবস্থার মধ্যে ঈদ

করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঈদে কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল৷ ফলে গার্মেন্টস কর্মীরা ঈদ করতে বাড়ি যাননি৷ অর্থনীতি সচল রাখতে দু’এক দিনের মধ্যে গার্মেন্টসগুলো খুলে দেয়া হবে৷

করোনার কারণে অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন৷ অনেকে নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না৷ আবার আর্থিক দুরবস্থার কারণে শহর ছেড়েছেন বহু মানুষ৷ অর্থনীতিবদদের হিসাবে কয়েক কোটি মানুষ নতুন দরিদ্র্য হয়ে পড়েছেন৷ এমন বাস্তবতায় ঈদ পালন নিয়ে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘‘অর্থনৈতিক দুরবস্থা তো শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই এর ঢেউ লেগেছে৷ এখন সরকার কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেগুলো যদি বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে৷ ইতোমধ্যে মধ্যবিত্তরা সঞ্চয় ভেঙে খেয়েছে৷ দুই কোটিরও বেশি মানুষ তাদের ক্রয়ক্ষমতা হারিয়েছে৷ আগে যারা গরু কোরবানি দিতেন এবার তারা হয়তো খাসি কোরবানি দিচ্ছেন৷ যিনি লাখ টাকার গরু কিনতেন এবার তিনি হয়তো ৫০ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনছেন৷ সব মিলিয়ে এর সামাজিক প্রভাবটা বেশ খারাপ৷ এতে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে৷ যেটা আমরা চাইব না৷’’

বর্জ্য অপসারণে ব্যাপক তৎপরতা

কোরবানির বর্জ্য অপসারণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মাঠে নেমেছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন৷ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের জন্য সাড়ে ৭০০ যানবাহন ব্যবহার করছে তারা৷ সেই সঙ্গে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বর্জ্য অপসারণে সাড়ে ১৭ হাজার কর্মী মাঠে থেকে সার্বক্ষণিক কাজ করছেন৷ কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘দ্রুত কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য নগরীতে ২৫৬টি স্থান চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে৷ এবার প্রায় ১০ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হবে৷ প্রতিবছরের মতো এবারও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা হবে৷’’

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তিন শতাধিক যানবাহন বর্জ্য অপসারণে কাজ করছে৷ এছাড়া ১২টি পানির গাড়ির মাধ্যমে স্যাভলন ও ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে পানি ছেটানো হচ্ছে৷ পরিবেশ সুরক্ষা ও দূষণমুক্ত রাখতে তারা ৪২টন ব্লিচিং পাউডার ও এক হাজার ৮০০ লিটার তরল জীবাণুনাশক ছেটাবে৷ তাদের নিজস্ব, আউটসোর্সিং এবং প্রাইমারি ওয়েস্ট কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার কর্মীসহ ১১ হাজার ৫০৮ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী মাঠে রয়েছে৷ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কপোরেশনেও সাড়ে ৫ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হবে৷ বর্জ্য সংরণের জন্য তারা প্রায় ১ লাখ বিশেষ ধরনের ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে৷ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসও বলেছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তারা সব বর্জ্য অপসারণ করবেন৷